স্টাফ রিপোর্টার
গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঢাকা সার্কেল-২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতীনাথ বসাকের নানা অনিয়ম এবং প্রাধিকার বহির্ভূত অভিজাত অফিস কক্ষ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় শেষ হতে না হতেই তার বিরুদ্ধে উঠেছে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। দুর্নীতির দায়ে বরখাস্তকৃত গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক অতি: প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসু (বর্তমানে একটি বড় গ্রুপ অফ কোম্পানিতে একটি বড় পদে কর্মরত) যে কিনা পিকে হালদার এবং গোল্ডেন মনিরের ঘনিষ্ঠ সহচর, তার সঙ্গে যোগসাজশে চালাচ্ছেন নানা অপকর্ম। অর্থ পাচার, ঘুপচি টেন্ডার, প্রদীপ কুমার বসু যে কোম্পানিতে কর্মরত সেটিকে অনৈতিকভাবে কাজ দিয়ে দেওয়া, বদলি বানিজ্য, টেন্ডার বানিজ্য, সেচ্ছাচারিতা, কি করছেন না তিনি। প্রদীপ কুমার বসু’র অবর্তমানে টিকিয়ে রেখেছেন তার সিন্ডিকেট। আর চালাচ্ছেন সীমাহীন দুর্নীতি।
এমনকি প্রদীপ কুমার বসু ক’দিন আগেই পাশের দেশ ভারতে গিয়েছেন চিকিৎসার অজুহাতে। কিন্তু মূল উদ্দেশ্য পিকে হালদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ। এই ভ্রমণের পৃষ্ঠপোষকও তিনি।
এর আগে সতিনাথ বসাক সমালোচিত হন তিন মাস ধরে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে তার কক্ষ সংস্কার করে। কারণ আগে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর যে কক্ষ ছিল তা ভেঙ্গে এখন ব্যক্তিগত সহকারির কক্ষ একত্রিত করে সাড়ে ৮ শ’ থেকে ৯ শ’ স্কয়ার ফিটের অফিস কক্ষ বানানো হয়েছে। যা ঐ এনেক্স ভবনে অবস্থিত তিনজন অতিরিক্ত প্রধান প্রধান প্রকৌশলীর অফিস কক্ষের চেয়েও বড় কক্ষ বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, এই কর্মকর্তা দায়িত্ব গ্রহনের পর প্রায় দশ মাস আগে কক্ষটির ওয়াশ রুমের কমোডসহ ফিটিংস পরিবর্তন করা হয়েছিল এবং দামি ফার্নিচার কেনা হয়েছিল। অথচ এই কক্ষটির জন্য ফের নতুন ফার্নিচার কেনার জন্য স্টিমেট তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে দামি টাইলস বসানোর পর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর তা পছন্দ না হওয়ায় আবার তা তুলে দামি পাথর বসানো হয়েছে।
এভাবে সরকারি টাকা অপচয় করছেন এই কর্মকর্তা। কাজ চলাকালিন প্রায় তিন মাস ধরে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতীনাথ বসাক তার স্টাফ অফিসারের কক্ষে বসেছেন এবং স্টাফ অফিসার সমীর কুমার কুন্ডু একজন সহকারি প্রকৌশলীর কক্ষে বসে অফিস করেছেন। একারনে সহকারি প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বসার জায়গা না পেয়ে ঘুরে বেড়াতেন।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতী নাথ বসাকের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়াসহ নানা অনিয়মেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, তাকে তিন পার্সেন্ট না দিলে কোন স্টিমেটে সই করেন না। তার অফিসকে মোট ৫ পার্সেন্ট দিতে হয় যার মধ্যে এসই ৩ পার্সেন্ট, স্টাফ অফিসার ১ পার্সেন্ট এবং উপ-সহকারি প্রকৌশলী মাহবুবা ১ পার্সেন্ট নেন। নির্বাহী প্রকৌশলীদের কাছ থেকে পার্সেন্টটিজ এর বিষয়টি কনফার্ম হওয়ার পরই তিনি স্টিমেটে সই করেন এবং কম্পিউটারে আইডি অনুমোদন দেন।
এভাবে তিনি কোটি কোটি টাকা অবৈধ আয় করেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঢাকা সার্কেল-২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতীনাথ বসাকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নিউজ কেন করবেন। এরপর প্রতিবেদক রেকর্ড অপশন চালু করলে তিনি বলেন অফিসে আসেন। কথা বলি।