‘এডিসি হারুন স্যার নন, আমার স্বামী দোষী’

‘এডিসি হারুন স্যার নন, আমার স্বামী দোষী’

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

রমনা বিভাগের বরখাস্তকৃত এডিসি হারুন অর রশীদ কর্তৃক ছাত্রলীগ নেতাদের নির্যাতনের ঘটনাটি একটি নতুন মোড় নিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার সানজিদা আফরিন নিপা।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সানজিদা জানান, আমি ২০১৯ সাল থেকেই হৃদযন্ত্রের জটিলতায় ভুগছিলাম। গত ৪-৫ মাস ধরে মেডিক্যাল কমপ্লেক্সিসিটি বেড়ে যায়। আর গত ২ থেকে ৩ সপ্তাহ ধরে বুকের ব্যাথাটাও বেড়ে গিয়েছিলো। আমি ল্যাবএইড হাসপাতালে দেখাই। সেখানকার চিকিৎসক আমাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে যেতে বলেছিলেন। শনিবার আমি চিন্তা করি যে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করেই যাই। সেই জন্যে আমি এডিসি হারুন অর রশীদ স্যারকে জরুরী ভিত্তিতে একটা তাৎক্ষণিক এপোয়েন্টমেন্ট নিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। সে অনুযায়ী তিনি ওসির মাধ্যমে একটি এপোয়েন্টমেন্টও ব্যবস্থা করে দেন। সেখানে সেদিন সন্ধ্যায় যাওয়ার পর জানতে পারি যে ওই চিকিৎসক একটি কনফারেন্সে আছেন। উনি আজকে রোগী দেখবেন না। জরুরী দেখে আমি বিষয়টি আবারও এডিসি স্যারকে জানাই। এরপর স্যার আমাকে বললেন যে ‘ঠিক আছে আপনি থাকেন, আমি এসে দেখি কোন ব্যবস্থা করা যায় কিনা।’

তিনি আরও বলেন, বেশ কিছুক্ষণ পর এডিসি স্যার আসেন, সেখানে চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ করেন এবং একজন চিকিৎসক’র এপোয়েন্টমেন্ট নিয়ে তাকে দেখাতে সক্ষম হই। উনি আমাকে বেশকিছু পরিক্ষা করাতে বলেন। আমি সেগুলো করিয়েছিও।

সানজিদা বলেন, যে সময়ের ঘটনা সে সময় আমি ইটিটি করাচ্ছিলাম। এরই এক পর্যায়ে আমি ইটিটি রুমের বাহিরে হট্টগোল হচ্ছে এমনটা টের পাই। আমি শুনতে পাই এডিসি স্যার বলছেন ‘আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন কেন! এটা তো আপনি করতে পারেন না।’

তিনি বলেন, আমি প্রথমে ভেবেছিলাম অন্য কারও সঙ্গে ঘটনা। কিন্তু বেরিয়ে দেখি আমার স্বামী আজিজুল হক মামুন খুবই উত্তেজিত অবস্থায় ছিলেন। তার সঙ্গে বেশ কয়েকজন ছেলেও ছিল। তারা সবাই মিলে এডিসি স্যারকে মারতে মারতে রুমের ভেতর নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে আমার স্বামী সেখানে তার সঙ্গে থাকা ছেলেগুলোকে বলছিলেন ‘তোরা ওদের (হারুন এবং সানজিদা) ভিডিও কর।’

তিনি বলেন, আমি পরিক্ষা করাচ্ছিলাম দেখে ইটিটির পোষাকে ছিলাম যেটা শালীন নয়। তাই আমার স্বামীকে বলি এই রুমে তো কোন ছেলে ঢোকার কথা না। তখন আমার স্বামী আমাকেও একটা চড় মারেন। এরই মধ্যে যারা ঘটনাটা ভিডিও করছিলেন আমি তাদের একজনের হাত থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। সে সময় একটা হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, আমার পরিস্কার ধারণা যে তাদের উদ্দেশ্য খারাপ ছিল। কারণ এডিসি স্যার তার সহকর্মীর অসুস্থতার জন্য সেখানে এসেছিলেন এবং বাহিরে অপেক্ষা করছিলেন। তারা চেষ্টা করছিল আমাদের দুইজনকে (হারুন ও সানজিদা) পাশাপাশি দাড় করিয়ে একটা প্রশ্নবিদ্ধ ভিডিও তৈরি করে সেটা ভাইরাল করবে। এডিসি স্যার তখনও অপেক্ষা করছিলেন। প্রায় পনের মিনিট পর থানা থেকে টিম আসে। তারপর তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

কি কারণে সেদিন তার স্ত্রী তাকে না জানিয়ে এডিসি হারুনের সঙ্গে চিকিৎসকের সিরিয়ালের জন্য যোগাযোগ করেছিলেন, এবং স্ত্রীর সঙ্গে তার কোন ঝামেলা চলছিল কিনা এবং তার এমন বিস্ফোরক মন্তব্য প্রসঙ্গে জানতে বারবার যোগাযোগ করা হলেও রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *