ইঞ্জিনিয়ার’র নির্দেশে আকাশকে রাতভর পেটানো হয়

ইঞ্জিনিয়ার’র নির্দেশে আকাশকে রাতভর পেটানো হয়

 

স্টাফ রিপোর্টারঃ

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি স্কুলের নির্মাণাধীন সাইটে প্রবেশ করে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী আকাশ সহ তার বেশ কয়েকজন বন্ধু। এতে নির্মাণাধীন সাইটের শ্রমিকরা তাদেরকে ধাওয়া করলে ভুক্তভোগীর বন্ধুরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও আকাশকে নির্মাণ শ্রমিকরা আটক করে তাদের থাকার জায়গায় নিয়ে যায়। পরে নির্মাণাধীন ভবনটির ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম এর নির্দেশে লোহার রড চুরির অভিযোগে মধ্যযুগীয় কায়দায় লাঠি, লোহার রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে শ্রমিকরা। পরদিন নিহত হয় আকাশ। এতে আকাশের ফুফু মোহাম্মদপুর থানায় বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এই ঘটনায় জড়িত ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো. মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে প্রান্ত (২৫), ২. মোঃ ফিরোজ (১৮), ৩. মো. মোস্তাফিজুর রহমান (৩৫)।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাব এর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদ সূত্রে তিনি বলেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১০ টায় ভুক্তভোগী আকাশ ও তার বন্ধুরা মিলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি স্কুলের নির্মাণাধীন সাইটে প্রবেশ করে। এ সময় নির্মাণাধীন সাইটের শ্রমিকরা তাদেরকে ধাওয়া করলে ভুক্তভোগীর বন্ধুরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ভুক্তভোগীকে নির্মাণ শ্রমিকরা আটক করে তাদের থাকার জায়গায় নিয়ে যায়। পরে গ্রেফতার মোয়াজ্জেম’র নির্দেশে ভুক্তভোগীকে লোহার রড চুরির অপবাদ দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় হাত পা বেঁধে বাঁশের সাথে ঝুলিয়ে লাঠি, লোহার রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। ভুক্তভোগীকে সারারাত পৈশাচিক ও নির্মমভাবে লাঠি, লোহার রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে ব্যাপক মারধর করায় ভুক্তভোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়।

তিনি বলেন, পরদিন সকাল ৬ টার দিকে ভুক্তভোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গ্রেফতাররা ভুক্তভোগীর ফুফু’কে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায়। ভুক্তভোগীর ফুফু ঘটনাস্থলে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যায়। সকাল ৮ টার দিকে ভুক্তভোগী মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সংবাদ শুনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকরা নির্মাণাধীন সাইট থেকে পালিয়ে রাজধানীর মগবাজার ও রমনাসহ বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যায়।

গ্রেফতারদের বিষয়ে খন্দকার মঈন বলেন, মোয়াজ্জেম উক্ত স্কুলের নির্মাণাধীন ভবণের সাইটের ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োজিত ছিল। তার নির্দেশে ভুক্তভোগীকে বাঁশের সাথে ঝুলিয়ে নির্যাতন করে এবং মোবাইলে পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। আর ফিরোজ ও মোস্তাফিজুর ভুক্তভোগী আকাশকে নির্যাতন করে। ফিরোজ পেশায় একজন শ্রমিক। মোস্তাফিজুর নির্মাণাধীন সাইটের ফোরম্যান হিসেবে নিয়োজিত ছিল।

গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *