সিনিয়র রিপোর্টারঃ
ঢাকাস্থ মিরপুর পাইকপাড়ায় সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের বর্তমান প্রকল্প পরিচালক গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ কে এম সোহরাওয়ার্দী ঠিকাদার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট পদ্ধতির বাহিরে কোনক্রমেই যান না। সোহরাওয়ার্দী একজন একনিষ্ঠ ভক্ত এবং অনুসারী হিসেবে কাজ পাইয়ে দেওয়া, অগ্রীম বিল প্রদানের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেন কারাগারে থাকা বিতর্কিত ঠিকাদার জিকে শামিমের সিন্ডিকেটের লোকদের।
এই এ কে এম সোহরাওয়ার্দীর নামে উৎকোঁচ গ্রহণ, ক্যাসিনোকান্ডের টাকা পাচার এবং প্রকল্পের টাকা নয় ছয় এবং বদলি ও টেন্ডার বানিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলাও হয়েছিলো। কিন্তু ছাড়া পেয়ে যান সঠিক লবিং আর অর্থের জোরে।
সাভারে জাতীয় জিন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্প, মিরপুর পূর্ত সার্কেলে আজ্ঞাবহ কর্মকর্তাদের দিয়ে অপ্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ, আবার কোন ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কাগুজে কাজ, অগ্রীম বিল উত্তোলনের এক অদ্ভুত নজির স্থাপণ করেছেন তিনি।
দরপত্র প্রক্রিয়াতে দুর্নীতি, যথাযথভাবে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করা, অপছন্দের ঠিকাদারকে কাজ না দেওয়া, অস্বাভাবিক মূল্যে প্রাক্কলন তৈরি, ছোট ছোট প্যাকেজে প্রকল্প প্রণয়ন, দরপত্রের শর্ত উপেক্ষা করা।
এছাড়া নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার; প্রকল্পের প্রণয়ন, তদারকি, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কাজে ধীরগতি; প্রয়োজনের তুলনায় কম বরাদ্দ; প্রকল্পের অনাবশ্যক ব্যয় বৃদ্ধি; স্থাপত্য ও কাঠামোগত নকশা চূড়ান্তে বিলম্ব; প্রত্যাশী সংস্থার প্রয়োজনমতো জরুরি ভিত্তিতে কাজ শেষ না করা; সেবা প্রদানের বিভিন্ন স্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসহযোগিতা; সময়মতো ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ না করা এবং বরাদ্দ থাকার পরও ঠিকাদারদের আংশিক বিল পরিশোধ করা। এই সমস্ত কাজেই সিদ্ধহস্ত সোহরাওয়ার্দী।
আলোচিত ক্যাসিনোকান্ডে গ্রেফতার হওয়া গোলাম কিবরিয়া শামীম (জিকে শামিম) এবং গোল্ডেন মনির এর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরে অপ-কর্মকান্ডে জড়িত কর্মকর্তাদের তালিকায় একেবারে উপরের দিকে অবস্থান এবং সবচেয়ে বেশি আলোচিত নাম তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ কে এম সোহরাওয়ার্দী।
টেন্ডার ও বদলি বানিজ্য তো আছেই, গেল জুন মাসের মধ্যে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা (এপিপি ২০২২-২০২৩) এ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয়ের পর বরাদ্দ দেওয়া অর্থের অবশিষ্টাংশ সরকারের কোষাগারে ফেরত না দিয়ে নিজ জোনের অধীনস্থ এক নির্বাহী প্রকৌশলীসহ গোঁজামিল দিয়ে ইতিমধ্যে লোপাট করে ফেলেছেন বলেও অভিযোগ এই সোহরাওয়ার্দীর বিরুদ্ধে। যার মধ্যে সাভারে এবং মিরপুরে তিনটি প্রায় শতকোটি টাকা মূল্যের প্রকল্পে তিনি যোগসাজশে অনিয়ম করে পকেট ভারী করার অভিযোগটি বেশ গুরুতর।
(পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত)