বিশেষ প্রতিনিধি
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সম্প্রতি দেশের বাজরে সোনার দাম উঠেছে নতুন উচ্চতায়। ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ এক হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। যদিও বিশ্ববাজারের তুলনায় এ দাম প্রতি ভরিতে অন্তত ১৪ হাজার টাকা বেশি।
বিশ্ববাজারের তুলনায় দেশের বাজারে সোনার দামের এ বিস্তর ফারাকের বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে সোনার খনি নেই। দেশে সোনা উৎপাদন হয় না। আবার অতিরিক্ত ট্যাক্সের কারণে এখন আমদানিও হচ্ছে না। রিসাইক্লিং করে যে সোনা পাওয়া যাচ্ছে তাই সরবরাহ করা হচ্ছে বাজারে।
জুয়েলারি ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, দেশের বাজারে সোনার দাম বেশি হওয়ার পেছনে বিশেষ একটি চক্র রয়েছে। এই চক্রের মর্জির ওপরই সোনার দাম বাড়া বা কমা নির্ভর করছে। এতে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা বর্তমানে বিপাকে রয়েছেন। সোনার বাড়তি দামের কারণে ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। অনেকে কর্মীদের বেতন পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
বিশ্ববাজার ও দেশের বাজারে সোনার দামের এই ব্যবধানের কারণ জানতে চাইলে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে সোনা আমদানি হয় না। কেউ সোনা আমদানি করছে না। আমরা রিসাইক্লিং করে যে সোনা পাই, আমাদের যে হোলসেল মার্কেট আছে সেখান থেকে কিনি। এরপর নামমাত্র মুনাফা ধরে দাম নির্ধারণ করা হয়। তাতে আমাদের তেমন কিছুই থাকে না।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগেও একজন লোক সোনার দুইটি টুকরা আনতে পারতেন ৪০ হাজার টাকা ট্যাক্স দিয়ে। এখন একটা টুকরা মানে ১০ ভরি সোনা আনতে ৪০ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতে হয়। বাজারে সোনার যে চাহিদা সেই অনুযায়ীও আমদানি নেই। এসব কারণেই আন্তর্জাতিক বাজার ও দেশের বাজারে সোনার দামে কিছুটা ব্যবধান রয়েছে।
অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাজুসের সাবেক এক সভাপতি বলেন, দেশে সোনার বাজার এখন মাফিয়াদের দখলে। প্রকৃত ব্যবসায়ীরা এখন ঠিকভাবে ব্যবসা করতে পারছেন না। একটি বিশেষ গোষ্ঠীর মাধ্যমে সোনার বাজার নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ওই চক্র যেভাবে চাচ্ছে, অনেকটা সেভাবেই বাজার চলছে। সোনার দাম বাড়া বা কমা তাদের ওপরই নির্ভর করছে।