সাধারণ মানুষের কাছে সরকারকে মাথানত করতেই হবেঃ গয়েশ্বর

সাধারণ মানুষের কাছে সরকারকে মাথানত করতেই হবেঃ গয়েশ্বর

সিনিয়র রিপোর্টারঃ

সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রশ্নে বিদেশী কাছে না হলেও দেশের ১৮ কোটি মানুষের কাছে সরকারকে মাথানত করতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শুক্রবার সকালে বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ ১৮ কোটি মানুষের এই সরকারের প্রতি সমর্থন নাই। বিদেশীদের কাছে মাথা নত করলো কি করলো না এটা বিএনপির মাথা ব্যথা নয়।”

‘‘ গণতান্ত্রিক বিশ্ব গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলছে, মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলছে, ন্যায় বিচারের পক্ষে কথা বলছে। তারা বাংলাদেশের জনগনের ভোটাধিকার নিয়ে কথা বলছে। সুতরাং যদি মাথানত করতে হয় সরকারকে ১৮ কোটি মানুষের কাছেই মাথা নত করতে হবে।”

বিদেশীরা কেনো বিএনপির পক্ষে সমর্থন দিচ্ছে প্রশ্ন করা হলে গয়েশ্বর বলেন, ‘‘ আমাদের কথা হলো তাদের(বিদেশীদের) সমর্থন আদায় করার বিষয় না। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়ছি, তারা(বিদেশীরা) গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলছে, আমরা ন্যায়-বিচার চাই তারা এদেশে জাস্টিস চায়, জনগনের অধিকার ভূলন্ঠিত না হয় সেটা তারা চায়। তারা মানবাধিকারের কথা বলে, তারা খুন-গুমের বিরুদ্ধে বলে। সূতরাং আমাদের এখানে চাওয়ার ব্যাপার নাই। তাদের নিজস্ব বিবেচনা বোধ থেকে তারা আমাদের দেশের জনগনের পক্ষে কথা বলছে।”

তিনি বলেন, ‘‘ বিএনপির প্রতিশ্রুতি একটি… সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা,মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সংবিধানে মানুষের সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠাই বিএনপির প্রতিশ্রুতি। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা রাজপথে লড়ছি দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য। শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকার বিকল্প নাই। আমরা দাঁড়িয়ে থাকার বিষয় নয় শুধু, ১৮ কোটি মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। সুতরাং কোনো রাজনৈতিক দল পরাজিত হলেও জনগন কখনো পরাজিত হয় না।”

‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রতিহিংসামূলক’ এমন মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, ‘‘ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একজন ক্ষনজন্মা পুরুষ। তিনি স্বাধীনতার ডাক দিয়ে কোনো শত্রু শিবিরে বন্দি ছিলেন না, আত্মসমর্পন করেন নাই। সম্মুখ লড়াই করে, নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। জিয়াউর রহমানের ওপর যে… চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে মর্মান্তিক মৃত্যুর পর জনগনের ভাষায় তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন এবং প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ তার জানাজায় অংশ নিয়েছেন।”

‘‘ এখন কারো কারো জানাজায় উপস্থিত হওয়ার ইতিহাস নাই এমনও আছে। অর্থাত যারা মারছে(হত্যা করেছে) তারাই কবর দিছে। সেই প্রতিহিংসার থেকে যদি কারো এই ধরনের উক্তি করে থাকে সেটা বলব অমানবিক। আমি বলব, উনি(শেখ হাসিনা) এমন কিছু ভালো কাজ করুক যাতে উনার জানাজায়ও মানুষ আসে।”

সকাল সাড়ে ১০টায় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতার কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করেন। তারা প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।

এ সময়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফরহাদ হালিম ডোনার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শ্যামা ওবায়েদ, আবদুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কায়সার কামাল, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরাফত আলী সপু, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, রফিকুল ইসলাম, ওবায়দুল ইসলাম, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, মীর নেওয়াজ আলী, তাইফুল ইসলাম টিপু, সেলিমুজ্জামান সেলিম, কাজী আবুল বাশার, রফিক শিকদার প্রমূখ নেতারা ছিলেন।

এছাড়া ঢাকা মহানগর বিএনপির আমিনুল হক, ইউসুফ মৃধা, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, জাসাসের হেলাল খান, জাকির হোসেন রোকন,মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার, ড্যাবের অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, ডা. আবদুস সালাম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, উলামা দলের শাহ নেসারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদার, মতস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কাদের গনি চৌধুরী, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক নুরুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উপলক্ষে বিকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের করবে বিএনপি।

দিবসটি উপলক্ষে সকালে নয়া পল্টন ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *